২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, দুপুর ১:৪৬
দস্তয়ভস্কি যখন প্রথম গল্পটি লিখলেন
সোমবার, ২০ জুলাই, ২০২০

দস্তয়ভস্কি তাঁর প্রথম রচনা ‘গরীব মানুষ’ লিখেছিলেন বাইশ পেরিয়ে তেইশ বছর বয়সের কালে। তখন তিনি থাকতেন সেন্ট পিটার্সবার্গে। সে সময়েই তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কেন এটি ত্যাগ করছেন তা নিজের কাছেও পরিষ্কার ছিল না। তিনি স্মৃতিচারণে বলেছেন যে কারণটি ছিল ‘অস্পষ্ট এবং অনিশ্চিত একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষা’।

এই ‘গরীব মানুষ’ লেখার আগে কোনোদিন শখের বশেও কিছু লেখেননি দস্তয়ভস্কি। এই লেখাটিও লিখতে শুরু করেছিলেন কোনো কিছু না ভেবেই এবং কোনো মডেল সামনে না রেখেই। একটা ঘোরের মধ্যে টানা লিখে শেষ করলেন নভেলাটি(দস্তয়ভস্কি এটিকে সবসময় গল্প বলেই আখ্যায়িত করেছেন)। তারপরেই পড়লেন চিন্তায়। কাকে দেখানো যায় গল্পটি। সেন্ট পিটার্সবার্গে অসংখ্য সাহিত্যিক এবং সাহিত্যগোষ্ঠী ছিল তখন। কিন্তু ডি. ভি. গ্রিগোরোভিচ ছাড়া আর কাউকে তিনি চিনতেন না। গ্রিগারোভিচও তখন পর্যন্ত একটি বার্ষিক সংকলনের জন্য ‘সেন্ট পিটার্সবার্গ হার্ভিগার্ডি মেন’ নামের একটি ছোটো নিবন্ধ ছাড়া আর কিছুই লেখেননি। তবে সেই সময়েই কিংবদন্তী হয়ে ওঠা কবি নেক্রাসভের সঙ্গে গ্রিগোরোভিচের ব্যক্তিগত যোগাযোগ ছিল খুবই ঘনিষ্ঠ। দস্তয়ভস্কি তাঁর একমাত্র পরিচিত লেখক গ্রিগোরোভিচকেই পড়তে দিলেন ‘গরীব মানুষ’। গ্রিগোরোভিচ কদিন পরেই গ্রীষ্ম-অবকাশ কাটানোর জন্য চলে যাবেন তার খামারবাড়িতে। যাবার আগে কয়েকদিনের জন্য তিনি থাকছিলেন নেক্রাসভের অ্যাপার্টমেন্টেই।

গ্রিগোরোভিচ ‘গরীব মানুষ’ হাতে নিলেন না। বরং দস্তয়ভস্কিকে বললেন- ‘তোমার পান্ডুলিপিটা নিয়ে নেক্রাসভের বাড়িতেই চলে এসো। তিনি আগামী বছর একটি গল্পের সংকলন করতে চাইছেন, পান্ডুলিপিটা তাকেই দেখাব’।

গরজ বড়ো বালাই। সেই গরজই দস্তয়ভস্কিকে বাধ্য করল নেক্রাসভের বাড়িতে যেতে। তিনি নেক্রাসভের দেখা পেলেন এক মিনিটের জন্য। হ্যান্ডশেকের সময়ই পান্ডুলিপি নিয়ে এসেছেন এই কথা ভেবে নিজের ভেতরটা গুলিয়ে গেল দস্তয়ভস্কির। কোনোমতে ওটা নেক্রাসভের হাতে তুলে দিয়েই বেরিয়ে এলেন বাইরে। 

এই লেখাটা নিয়ে নেক্রাসভ নির্ঘাৎ হাসি-তামাসা করবেন- এটাই ছিল দস্তয়ভস্কির ধারণা। তখন ‘ওটেকেস্টভেনিয়ে জাপিস্কি’র দলকে সমীহ করত না এমন কেউ ছিল না। এটি ছিল নেক্রাসভ এবং সালটিকভ শুকেদ্রিন সম্পাদিত সবচেয়ে মর্যাদাবান সাহিত্যের কাগজ। সেই কাগজের প্রধান লেখক ছিলেন বেলিনস্কি। দস্তয়ভস্কি ছিলেন বেলিনস্কির মুগ্ধ পাঠক। কিন্তু কোনোদিন তাঁর বা তাঁদের গ্রুপের কারো সাথে সাক্ষাৎ করবেন এমনটি স্বপ্নেও ভাবার সাহস পাননি। কেন যে গ্রিগোরোভিচের কথায় নেক্রাসভের কাছে নিয়ে গেলেন অপটু হাতে লেখা অকিঞ্চিৎ এই গল্পটি! একটু পর পর নিজেকে দোষারোপ করছিলেন এই কাজের জন্য। তবে আবার নিজেকে এই বলে সান্ত¦না দিচ্ছিলেন যে- গল্পটা আমি আবেগ দিয়ে লিখেছি, প্রায় অশ্রু দিয়ে। লিখতে গিয়ে কলম হাতে আমি যেসব মুহূর্তের মধ্য দিয়ে গেছি সেগুলি সবই কি মিথ্যা? সবই মরীচিকা? সব আবেগটুকুই কি ভুল? তা কি কোনোদিন হতে পারে?

পান্ডুলিপি নেক্রাসভের কাছে হস্তান্তর করে দস্তয়ভস্কি রাতে নিজের ঘরে ফেরেননি। চলে গিয়েছিলেন শহরের আরেকপ্রান্তে এক বন্ধুর বাড়িতে। দুজনে মিলে প্রায় সারারাত ধরে পড়লেন গোগলের ‘ডেড সোলস’। তখন সময়টা ছিল এমনই। দুইজন বা তিনজন লেখাপড়া জানা মানুষ একত্রিত হলেই গোগলের রচনাপাঠ শুরু হতো। দস্তয়ভস্কির ভাষায়- ‘তখন যে পরিস্থিতি ছিল, তরুণদের মধ্যে অনেকেই একটি কোনোকিছু নিয়ে বুঁদ হয়ে থাকত, প্রতীক্ষায় থাকত একটা কোনোকিছুর।’

ভোর চারটায় বাড়ি ফিরলেন দস্তয়ভস্কি। তখন শ্বেতরাত্রি। দিনের মতোই স্পষ্ট আলো। অপূর্ব উষ্ণ আবহাওয়া। ঘরে ঢুকে বিছানায় গেলেন না দস্তয়ভস্কি। তখনো মাথার মধ্যে নিকোলাই গোগোল। জানালার   পাল্লা খুলে দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে বসে রইলেন। হঠাৎ শুনতে পেলেন দরজার ঘণ্টি বাজছে। অবাক হলেন। এত ভোরে তো কারো আসার কথা না! দরজা খুলতেই হুড়মুড়িয়ে ঘরে ঢুকলেন নেক্রাসভ আর গ্রিগোরোভিচ। নেক্রাসভ ছুটে এসে আলিঙ্গন করলেন দস্তয়ভস্কিকে। আবেগে চোখ থেকে তাঁর বেরিয়ে এসেছে পানি।

গ্রিগোরোভিচ বর্ণনা দিলেন তাদের পাঠ-অভিজ্ঞতার। সেদিন সন্ধ্যায় তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরেছিলেন তারা। অন্য কাজ শুরুর আগে দস্তয়ভস্কির পান্ডুলিপিটা হাতে নিলেন একবার চোখ বুলানোর জন্য। মোট ১১২ পাতার লেখা। তাদের সিদ্ধান্ত ছিল ‘পাতা দশেক’ পড়া হবে। তাহলেই বোঝা যাবে লেখা এবং লেখকের মধ্যে কোনো সারবস্তু আছে কি না। দশপাতা পড়ার পরে তারা বললেন আরো দশপাতা পড়া যাক। এইভাবে পুরো ১১২ পাতা পড়া হলো। তারপর আর কেউ অন্য কাজ করেননি। বার বার দুজনে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে লেখাটি পড়েছেন। একবার নেক্রাসভ, আরেকবার গ্রিগোরোভিচ। পালাক্রমে সারারাত পড়েছেন তার এই একই লেখা। গ্রিগোরোভিচ একথাও বললেন যে লেখাটি পড়তে পড়তে কেঁদেছেন নেক্রাসভ। ‘ছাত্রটির মৃত্যুর জায়গাটি পড়ছিলেন তিনি। হঠাৎ দেখি, সেই যে, যেখানে বাবা ছুটে যায় কফিনের পেছনে, নেক্রাসভের গলার স্বর ভেঙে যেতে শুরু করেছে।’

নেক্রাসভ সিদ্ধান্ত নিলেন, এক্ষুনি যেতে হবে দস্তয়ভস্কির সাথে দেখা করতে। গ্রিগোরোভিচ বলতে চেয়েছিলেন এখন হয়ত ঘুমাচ্ছে দস্তয়ভস্কি। শুনেই খেঁকিয়ে উঠলেন নেক্রাসভ- ‘ঘুমোচ্ছে তো কী হয়েছে! ঘুম থেকে ওকে টেনে তুলব। ঘুমের চেয়ে এটা অনেক জরুরি।’

নেক্রাসভ ছিলেন চাপা স্বভাবের, সংযত এবং কথা বলার ক্ষেত্রে খুবই সতর্ক মানুষ। সেই মানুষের এমন উচ্ছ্বাস! আধাঘণ্টা ছিলেন তাঁরা দস্তয়ভস্কির ঘরে। নানা বিষয়ে কথা হলো। কিন্তু দস্তয়ভস্কি বার বার বললেন বেলিনস্কির কথা। বেলিনস্কি তাকে কী রকম মুগ্ধ করে তা তিনি সবিস্তারে জানালেন নেক্রাসভকে। নেক্রাসভ সঙ্গে সঙ্গে বললেন- ‘আজকেই আমি আপনার গল্পটি বেলিনস্কিকে দেব। এবং আপনি দেখবেন- কী মানুষ! কী একটা মানুষ বেলিনস্কি! একটু পরিচয় হলেই দেখবেন কী হৃদয় তার!’

তাকে ঘুমানোর অবকাশ দিয়ে বেরিয়ে গেলেন নেক্রাসভ এবং গ্রিগোরোভিচ। কিন্তু দস্তয়ভস্কি, সেদিনের তরুণতম গল্পলেখক দস্তয়ভস্কি ঘুমান কী করে! এ আনন্দ তিনি রাখবেন কোথায়! কারণ- ‘মানুষের জীবনে সাফল্য আসতে পারে, সে প্রশংসা পেতে পারে, তার সঙ্গে দেখা হলে লোকে তাকে অভিনন্দন জানাতে পারে, কিন্তু এঁরা ভোর চারটায় ছুটে এসেছেন চোখে জল নিয়ে, এইসব কথাই মনে হচ্ছিল আমার। আমি ঘুমাই কেমন করে!’

এরপরে রুশসাহিত্যের সেই সময়ের আরেক দিকপাল সাহিত্য সমালোচক বেলিনস্কির প্রতিক্রিয়ার পালা। নেক্রাসভ সেদিনই পান্ডুলিপি নিয়ে বেলিনস্কির কাছে গিয়েছিলেন। তাঁর দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে নেক্রাসভ বেশ উত্তেজিত উচ্চকণ্ঠে বললেন- নতুন গোগোলের আবির্ভাব ঘটেছে। বেলিনস্কি একটু ঠাট্টার স্বরে বললেন- তুমি তো পারলে রোজই একজন করে নতুন গোগোল খুঁজে আনছ!

বললেন বটে, তবে দস্তয়ভস্কির ‘গরীব মানুষ’-এর পান্ডুলিপিটা রেখেও দিলেন।

নেক্রাসভ এতই শ্রদ্ধা করতেন বেলিনস্কিকে, যে সেটাকে পূজা বলাই সঙ্গত হবে। সবাই জানত, বেলিনস্কিকে তিনি যতটা ভালো বাসতেন, ততটা ভালো জীবনে আর কাউকে বাসেননি। নেক্রাসভ সেন্ট পিটার্সবার্গে এসেছিলেন একেবারেই অল্প বয়সে। তখন তার বয়স মাত্র ষোল বছর। সেই বয়সেই তিনি লেখাকে নিজের ধ্যানজ্ঞান করে নিয়েছিলেন। বেলিনস্কি তাঁকে সেই সময় থেকে প্রশ্রয় এবং আশ্রয় দিয়ে চলেছেন। বয়সের অসমতা সত্ত্বেও তাদের বন্ধন ছিল প্রায় অমর। ‘গরীব মানুষ’-এর পান্ডুলিপি সকালে বেলিনস্কির কাছে রেখে গিয়েছিলেন নেক্রাসভ। সন্ধ্যায় তিনি আবার গেলেন তার বাড়িতে। ততক্ষণে পরিস্থিতি আমূল পাল্টে গেছে। বেলিনস্কি রীতিমতো উত্তেজিত। নেক্রাসভকে দেখামাত্র চেঁচিয়ে উঠলেন তিনি- ওকে নিয়ে এসো! যত তাড়াতাড়ি পারো নিয়ে এসো! তৃতীয় দিনে নেক্রাসভ সঙ্গে নিয়ে গেলেন দস্তয়ভস্কিকে। ‘আতঙ্ক জাগানো ভয়ঙ্কর সেই সমালোচকটি’ তাকে অভ্যর্থনা জানালেন খুবই সংযতভাবে। যথারীতি গম্ভীর মুখে। দস্তয়ভস্কি মনে মনে বললেন- এমনটাই তো হওয়া উচিত। বেলিনস্কির মতো এতবড় একজন সাহিত্য তাত্ত্বিক এই রকম আচরণ করবেন, এটাই স্বাভাবিক।

কিন্তু এক মিনিট পরেই পরিস্থিতি পালটে গেল। বেলিনস্কি তীব্রস্বরে কথা বলে উঠলেন, তাঁর চোখদুটো জ্বলছে- আপনি জানেন কী লিখেছেন আপনি? আপনি কি বোঝেন কী লিখেছেন আপনি?

একই প্রশ্ন কমপক্ষে সাতবার করলেন বেলিনস্কি। কিন্তু জবাব দেবার কোনো ফুরসত দিলেন না দস্তয়ভস্কিকে। বরং নিজেই বলে চললেন একটানা- শিল্পী হিসাবে তাৎক্ষণিক প্রেরণায় হয়ত আপনি লিখেছেন, কিন্তু ভয়ংকর যেসব সত্য আপনি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন তার সবই কি আপনি বুঝে সুঝে যুক্তি দিয়ে গঠন-পুনর্গঠন করেছেন? আপনি আপনার এই কুড়ি-বাইশ বছর বয়সে এসব উপলব্ধি করতে পারবেন, এটা অসম্ভব- এটা অসম্ভব। আপনার ঐ হতভাগ্য কর্মচারীটির কথাই ধরুন। অদ্ভুত! কতদিন ধরে এবং কী মরিয়া হয়েই না সে তার কাজের জায়গায় ঘাম ঝরিয়েছে, নিজেকে সে এমন স্তরে নামিয়ে নিয়ে গেছে যে নিজেকে এমনকী হতভাগ্য ভাবার সাহসটুকুও তার আর অবশিষ্ট নেই- এমনই দীন তার অবস্থা- এবং তুচ্ছতম নালিশ জানানোটাও দুঃসাহসী স্বাধীন চিন্তার কাজ বলে মনে হয় তার- তার ঝোঁকটা প্রায় সেই রকমই, এমনকী দুর্ভাগ্যের অধিকার দাবি করার সাহসটুকুও তার নেই- তার ওপরওয়ালা, উঁচুতলার সেই সরকারি কর্মচারীটি, দয়ালু মানুষটি, যখন তাকে একশো রুবল দান করে, লোকটা তখন চুরমার হয়ে যায়, স্তমিÍত বিস্ময় তাকে একেবারে ধ্বংস করে ফেলে; তার মতো একজনকে ‘দেয়ার এক্সেলেন্সি’ কীভাবে দয়া করতে পারেন! ‘হিজ এক্সেলেন্সি’ নয়- ‘দেয়ার এক্সেলেন্সি’। আপনার উপন্যাসে সে তা-ই বলে। এবং সেই ছেঁড়া বোতামটা! যে মুহূর্তে সে ‘দেয়ার এক্সেলেন্সি’র হস্তচুম্বন করে- না, ব্যাপারটা আর সেই হতভাগ্য মানুষটির প্রতি সমবেদনা থাকে না, আতঙ্ক হয়ে ওঠে, আতঙ্ক! এই কৃতজ্ঞতার মধ্যেই তার আতঙ্ক।  এই-ই হলো ট্র্যাজেডি। আপনি ব্যাপারটার একেবারে মূল ছুঁয়ে দিয়েছেন। কলমের একটি খোঁচায় আপনি একেবারে আসল জিনিসটি দেখিয়ে দিয়েছেন। আমরা আইন, বা রাজনীতির বিশেষজ্ঞরা, সমালোচকরা, আমরা চেষ্টা করি কথা দিয়ে ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করতে। কিন্তু আপনি, একজন শিল্পী, একটি আঘাতে, তুলির একটি টানে একেবারে সারটুকু সামনে নিয়ে এসেছেন। কাজটি করেছেন একটি প্রতিমার মাধ্যমে, যাতে হাত দিয়ে ছোঁয়া যায়, যাতে যুক্তিতর্কের ধার ধারে না এমন পাঠকও মুহূর্তে গোটা ব্যাপারটা ধরে ফেলতে পারে। এটাই তো শিল্পের রহস্য! এই-ই তো শিল্পের সত্য! সত্যের প্রতি শিল্পীর অবদান তো এই-ই। আপনি শিল্পী। সত্য আপনার কাছে উন্মোচিত, প্রতিভাত; সত্য আপনার কাছে এসেছে উপহার হয়ে। এ উপহারকে সম্পদ করে রাখুন। এর প্রতি বিশ্বস্ত থাকুন। দেখবেন আপনি একজন মহান সাহিত্যিক হবেন।

দস্তয়ভস্কি, তেইশ বছরের এক তরুণ লেখক, বেলিনস্কির বাড়ি থেকে সেদিন বেরিয়ে এলেন পরমাশ্চর্য এক আনন্দকে সঙ্গী করে। বেলিনস্কির বাড়ির কোণে দাঁড়িয়ে তিনি আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলেন অনেকক্ষণ। কী উজ্জ্বল দিন! চারপাশের মানুষদের দেখতে তার তখন অত্যন্ত ভালো লাগছে।  এবং দস্তয়ভস্কি সমস্ত মনপ্রাণ দিয়ে, সমগ্র সত্তা দিয়ে অনুভব করতে পারছেন যে চরম গুরুত্বপূর্ণ একটা মুহূর্ত তাঁর জীবনে এসেছে, চূড়ান্ত মোড় নেবার মুহূর্ত। তবে, বেলিনস্কি তাঁকে যেটি সবচেয়ে জোর দিয়ে বলেছিলেন, ‘বিশ্বস্ত’ থাকতে হবে।

নিজের কাছে বিশ্বস্ত।

জীবনের কাছে বিশ্বস্ত।

সত্যের কাছে বিশ্বস্ত।

শিল্পের কাছে বিশ্বস্ত।

মাতৃভূমির কাছে বিশ্বস্ত।

মানুষের কাছে বিশ্বস্ত।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *